প্রসূতি রোগ কি কারণে হয় প্রসূতি রোগের কারণ কি এবং উহার চিকিৎসা ও প্রতিকার
প্রসূতি রোগ: কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
প্রসূতি রোগ বলতে সাধারণত সেই সমস্যাগুলো বোঝায়, যা গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা প্রসব পরবর্তী সময়ে মা এবং শিশুর উপর প্রভাব ফেলে। হোমিওপ্যাথি এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রসূতি রোগের কারণ, চিকিৎসা এবং প্রতিকার নিয়ে ভিন্ন মত থাকতে পারে, তবে উভয় ক্ষেত্রেই রোগের কারণ ও লক্ষণগুলো প্রায় একই রকম।
প্রসূতি রোগের কারণ:
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে প্রচুর হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা শরীরে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে এবং রোগের কারণ হতে পারে।
- পুষ্টিহীনতা: গর্ভবতী মহিলার খাদ্যে পুষ্টির ঘাটতি থাকলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন: অ্যানিমিয়া, হাইপারটেনশন ইত্যাদি।
- অ্যান্টেনাটাল যত্নের অভাব: গর্ভাবস্থায় সঠিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের অভাব হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- জেনেটিক বা বংশগত সমস্যা: পরিবারের ইতিহাসে কোনো প্রসূতি রোগ থাকলে তা পরবর্তী প্রজন্মে প্রভাব ফেলতে পারে।
- সংক্রামক রোগ: কিছু ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ গর্ভাবস্থায় মারাত্মক সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন: জিকা ভাইরাস, রুবেলা, ইত্যাদি।
হোমিওপ্যাথি অনুযায়ী প্রসূতি রোগের চিকিৎসা:
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় রোগীর সম্পূর্ণ শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখানে কয়েকটি সাধারণ ঔষধের উদাহরণ দেওয়া হলো:
- কালি কার্ব (Kali Carb): শ্বাসকষ্ট বা ক্লান্তিতে ভুগছেন এমন গর্ভবতী নারীদের জন্য কার্যকর।
- সেকালে কর্নুটাম (Secale Cornutum): প্রসবের সময় রক্তক্ষরণের জন্য উপকারী।
- পালসেটিলা (Pulsatilla): হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং মানসিক অস্থিরতা দূর করতে সহায়ক।
আধুনিক চিকিৎসা অনুযায়ী প্রতিকার:
- প্রসবপূর্ব যত্ন (Antenatal Care): গর্ভাবস্থার সময় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সঠিক পুষ্টি ও খাদ্য: পুষ্টিকর খাদ্য গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ গর্ভাবস্থায় বিপজ্জনক হতে পারে, তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে।
- সংক্রমণ প্রতিরোধ: সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য টিকা ও সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন।
প্রসূতি রোগের ক্ষতি:
- মাতৃ মৃত্যুর ঝুঁকি: যদি প্রসূতি রোগের সঠিক চিকিৎসা না হয়, তাহলে প্রসবের সময় মাতৃ মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- শিশুর ক্ষতি: প্রসূতি রোগের কারণে শিশুর জন্মের সময় সমস্যা, অপুষ্টি, এবং ক্ষেত্রবিশেষে নবজাতকের মৃত্যুও হতে পারে।
রেফারেন্স:
- Clarke, J. H. (1989). “A Dictionary of Practical Materia Medica.” B. Jain Publishers Pvt Ltd.
- Allen, H. C. (2002). “Allen’s Keynotes Rearranged and Classified.” B. Jain Publishers Pvt Ltd.
- Agrawal, M. (2021). “Textbook of Gynaecology.”
- Elsevier India
- প্রসূতি বিদ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন