Best Homeopathic Treatment

কি কারণে মুখের ভিতরে ঘা হয় উহার চিকিৎসা এবং প্রতিকার

কি কারণে মুখের ভিতরে ঘা হয়

হোমিওপ্যাথিক ও অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে কি কারণে মুখের ভিতরে ঘা হয় উহার চিকিৎসা এবং প্রতিকার

মুখের ভিতরে ঘা হওয়া (অ্যাফথাস আলসার বা মুখের আলসার) একটি সাধারণ সমস্যা, যা হোমিওপ্যাথি ও অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এটি সাধারণত মুখের ভিতরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে এবং বেশ ব্যথাদায়ক হতে পারে। এর বিভিন্ন কারণ, প্রতিকার ও করণীয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

মুখের ঘা হওয়ার কারণ

হোমিওপ্যাথিক মতে:
হোমিওপ্যাথি মতে, মুখের ভিতরে ঘা শরীরের ভিতরের ভারসাম্যহীনতার ফল। মুখের ঘা হওয়ার মূল কারণ হতে পারে শরীরের ভিটাল ফোর্স বা প্রাণশক্তির দুর্বলতা। কিছু সাধারণ কারণ:

  1. অপর্যাপ্ত পুষ্টি: শরীরে আয়রন, ফোলেট বা ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি।
  2. অতিরিক্ত মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ বা উদ্বেগ।
  3. অ্যালার্জি বা সংক্রমণ: খাদ্য অ্যালার্জি বা মুখের সংক্রমণ।
  4. বংশগত সমস্যা: পরিবারে পূর্ববর্তী ইতিহাস থাকা।
  5. পাকস্থলী বা হজমজনিত সমস্যা: এসিডিটি বা হজমের সমস্যা।

অন্যান্য চিকিৎসা মতে:
মুখের ঘা সাধারণত অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিম্নলিখিত কারণে হতে পারে:

  1. দাঁত বা মাড়ির ক্ষত: দাঁতের তীক্ষ্ণ প্রান্তের কারণে মাড়ির ক্ষত।
  2. অপুষ্টি: পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব।
  3. অটোইমিউন সমস্যা: শরীরের ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা।
  4. ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ: মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ।

চিকিৎসা এবং প্রতিকার

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা: হোমিওপ্যাথিতে রোগীর সার্বিক অবস্থা বিচার করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। কিছু সাধারণ হোমিওপ্যাথিক ওষুধ:

  1. বোরাসিক অ্যাসিড (Borax): ছোট ছোট, ব্যথাযুক্ত ঘা হলে।
  2. মারক সল (Merc Sol): মুখে ঘা ও মুখের দুর্গন্ধ থাকলে।
  3. নাট্রাম মিউর (Natrum Muriaticum): বারবার মুখে ঘা হলে, বিশেষ করে মানসিক চাপের কারণে।
  4. আরসেনিকাম অ্যালবাম (Arsenicum Album): মুখে পুড়নো ধরনের অনুভূতি হলে।

অন্যান্য চিকিৎসা:

  1. অ্যান্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ: মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
  2. জেল বা ক্রিম: স্থানীয় ভাবে ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে ব্যবহার করা যায়।
  3. ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট: ভিটামিন বি১২, আয়রন এবং ফোলেটের ঘাটতি থাকলে এগুলি পরিপূরক হিসেবে দেওয়া হয়।
  4. স্টেরয়েড ওষুধ: মুখের ঘা গুরুতর হলে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

করণীয় ও বর্জনীয়

করণীয়:

  1. পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ: ফল, শাকসবজি ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
  2. মুখ পরিষ্কার রাখা: নিয়মিত দাঁত ব্রাশ এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার।
  3. পর্যাপ্ত বিশ্রাম: মানসিক চাপ কমানো এবং শারীরিক বিশ্রাম নেওয়া।
  4. মানসিক চাপ কমানো: নিয়মিত মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম করা।

বর্জনীয়:

  1. মশলাযুক্ত খাবার: মশলাযুক্ত বা তীব্র খাদ্য গ্রহণ এড়িয়ে চলা।
  2. ধূমপান ও মদ্যপান: এগুলি মুখের ঘা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  3. অতিরিক্ত টক ও লবণাক্ত খাবার: টক বা অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার মুখের ঘাকে বিরক্ত করতে পারে।

রেফারেন্স বই:

  1. স্যামুয়েল হ্যানিম্যানOrganon of Medicine
  2. ড. জর্জ ভিথুলকাসThe Science of Homeopathy
  3. ড. ফ্রান্সিস ট্রেভেলিয়ানClinical Homeopathy
  4. ড. রবার্ট ডাভিসOral Pathology in Modern Medicine

এই বইগুলোতে মুখের ঘা হওয়ার কারণ, চিকিৎসা এবং প্রতিকার সংক্রান্ত ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *