একদৈশিক রোগ কাকে বলে উহার সংজ্ঞা এবং উহার প্রকারভেদ
একদৈশিক রোগ (One-sided Diseases) – হোমিওপ্যাথিক নিয়ম অনুযায়ী:
সংজ্ঞা:
হানিম্যানের মতে, একদৈশিক রোগ হলো এমন রোগ যা রোগীর দেহে সীমিত লক্ষণ প্রকাশ করে। অর্থাৎ, এই রোগে রোগীর মূল রোগের লক্ষণগুলো কম বা অস্পষ্ট থাকে, এবং রোগটি তার পূর্ণ রূপে প্রকাশ পায় না। একদৈশিক রোগে প্রধান লক্ষণগুলো সাধারণত একজন চিকিৎসকের জন্য যথেষ্ট বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করার মতো নয়, ফলে রোগটি নির্ণয় করা কঠিন হয়।
একদৈশিক রোগের প্রকারভেদ:
১. অভ্যন্তরীণ একদৈশিক রোগ (Internal One-sided Diseases): এই প্রকারের রোগে রোগীর দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা সিস্টেমে সমস্যার সৃষ্টি হয়, কিন্তু বাহ্যিক লক্ষণ খুব কম প্রকাশ পায়।
২. বাহ্যিক একদৈশিক রোগ (External One-sided Diseases): এখানে বাহ্যিক লক্ষণ যেমন ত্বকের রোগ, ফোড়া বা ক্ষত, ইত্যাদি প্রকাশিত হয়, কিন্তু রোগের অভ্যন্তরীণ প্রভাব পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না।
একদৈশিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি:
হোমিওপ্যাথিতে একদৈশিক রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণসমূহ সংগ্রহ করা এবং বিশ্লেষণ করা হয়। তারপর সঠিক ওষুধ নির্বাচন করা হয় যা রোগীর সম্পূর্ণ লক্ষণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১. লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ নির্বাচন: একদৈশিক রোগের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণগুলো সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হয়। এরপর রোগীর স্বাভাবিক প্রবণতা ও শরীরের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী ওষুধ নির্বাচন করা হয়।
২. সংবেদনশীলতা পরীক্ষা: একদৈশিক রোগের ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক সংবেদনশীলতার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
৩. অনুসন্ধান এবং পুনঃপরীক্ষা: সময়ে সময়ে রোগীর লক্ষণ পুনরায় পর্যবেক্ষণ করে ওষুধের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হয় এবং প্রয়োজন হলে ওষুধ পরিবর্তন করা হয়।
বইয়ের রেফারেন্স:
- অর্গানন অফ মেডিসিন (Organon of Medicine) – স্যামুয়েল হ্যানিম্যান
- কেন্ট’স লেকচার্স অন হোমিওপ্যাথিক ফিলোসফি (Kent’s Lectures on Homeopathic Philosophy) – জেমস টাইলার কেন্ট
- হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা (Homeopathic Materia Medica) – উইলিয়াম বোয়েরিক