জন্ডিস কাকে বলে জন্ডিসের কারণ কি উপহার প্রতিকার ও চিকিৎসা কি?
জন্ডিস: হোমিওপ্যাথিক ও অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে
জন্ডিস হলো একটি সাধারণ রোগ যা শরীরের ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং অন্যান্য টিস্যুগুলোর হলুদ বর্ণ ধারণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এটি মূলত লিভারের কার্যকারিতা ব্যাহত হলে এবং রক্তে বিলিরুবিন নামক পদার্থের মাত্রা বেড়ে গেলে ঘটে।
জন্ডিসের কারণ:
- লিভারের সমস্যা: লিভার সংক্রমণ, লিভার সিরোসিস বা লিভারের অন্যান্য সমস্যার কারণে বিলিরুবিন যথাযথভাবে প্রসেস করতে পারে না।
- হেপাটাইটিস: ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস (A, B, C, ইত্যাদি) লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে বিলিরুবিন জমা হয়।
- পিত্তনালী বন্ধ হওয়া: পিত্তনালী বন্ধ হলে বিলিরুবিন জমা হয় এবং শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, যা জন্ডিসের সৃষ্টি করে।
- রক্তের সমস্যা: রক্তের লোহিত কণিকা ভেঙে বেশি পরিমাণে বিলিরুবিন তৈরি হলে এবং তা শরীর থেকে বের হতে না পারলে জন্ডিস হয়।
লক্ষণসমূহ:
- ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া
- প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হওয়া
- মল বর্ণহীন বা হালকা রঙের হওয়া
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- বমি বমি ভাব ও খাবারে অনিচ্ছা
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অনুযায়ী, রোগীর সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ভিত্তিতে ওষুধ প্রদান করা হয়। জন্ডিসের ক্ষেত্রে রোগীর লক্ষণ এবং ব্যক্তিগত অবস্থার ওপর ভিত্তি করে নীচের কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হতে পারে:
- Chelidonium Majus: ডানদিকের লিভার সমস্যা ও তীব্র যন্ত্রণার জন্য।
- Nux Vomica: অ্যালকোহল বা অতিরিক্ত ওষুধের প্রভাবে হওয়া লিভার সমস্যার জন্য।
- Lycopodium: গ্যাসের সমস্যা এবং পিত্তাশয়ের কারণে সৃষ্ট জন্ডিসের জন্য।
এলোপ্যাথিক চিকিৎসা:
এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় সাধারণত জন্ডিসের মূল কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। যেমন, হেপাটাইটিস হলে তার জন্য নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়। পিত্তনালী বন্ধ হলে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিকার ও প্রতিরোধ:
- হেপাটাইটিসের টিকা গ্রহণ করা
- পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ খাবার ও পানি গ্রহণ করা
- অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলা
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
চিকিৎসা:
জন্ডিসের চিকিৎসা রোগের কারণের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ধীরে ধীরে রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে, এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। অন্যদিকে, এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহৃত হয়।
রেফারেন্স:
- Hahnemann, S. (2002). Organon of Medicine. B. Jain Publishers.
- Boericke, W. (1996). Boericke’s New Manual of Homoeopathic Materia Medica with Repertory. B. Jain Publishers.
- Allen, H. C. (2017). Keynotes and Characteristics with Comparisons of some of the Leading Remedies. B. Jain Publishers.