Best Homeopathic Treatment

স্পেসিফিক রিমেডি কাকে বলে , অঘোম ঔষধ বলতে কী বোঝায়

স্পেসিফিক রিমেডি কাকে বলে

স্পেসিফিক রিমেডি কাকে বলে , অঘোম ঔষধ বলতে কী বোঝায়, অব্যার্থে ঔষধ কিভাবে নির্বাচন করবে

স্পেসিফিক রিমেডি ও অঘোম ঔষধের ধারণা

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় “স্পেসিফিক রিমেডি” এবং “অঘোম ঔষধ” অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর দ্রুত আরোগ্য লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এই প্রবন্ধে আমরা এই দুই ধারণা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

স্পেসিফিক রিমেডি (Specific Remedy)

স্পেসিফিক রিমেডি হলো সেই ঔষধ যা নির্দিষ্ট রোগ বা লক্ষণের জন্য প্রয়োগ করা হয়। হ্যানিম্যানের মতে, প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ এবং শারীরিক অবস্থা ভিন্ন হতে পারে। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো রোগীর ব্যক্তিগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে সঠিক ঔষধ নির্ধারণ করা। হোমিওপ্যাথিতে, “Similia Similibus Curentur” নীতির ভিত্তিতে, স্পেসিফিক রিমেডি নির্বাচন করা হয়, যা রোগের লক্ষণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

উদাহরণ

একজন রোগীর যদি ঠান্ডা এবং কাশির সমস্যা দেখা দেয়, তবে সেই রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী নাকের স্রাব, কাশির প্রকৃতি, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে স্পেসিফিক রিমেডি নির্বাচন করা হয়। এ ক্ষেত্রে, একটি নির্দিষ্ট ঔষধ যেমন Arsenicum Album বা Belladonna রোগীর লক্ষণের সাথে মিলে গেলে, সেটি স্পেসিফিক রিমেডি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অঘোম ঔষধ (Unerring Medicine)

অঘোম ঔষধ হলো সেই ঔষধ, যা সঠিকভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে নির্ভুল ফলাফল প্রদান করে। হ্যানিম্যানের মতে, একটি ঔষধ তখনই অঘোম হতে পারে, যখন তা রোগীর লক্ষণ এবং শারীরিক অবস্থার সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। অঘোম ঔষধ নির্বাচন করার জন্য চিকিৎসককে রোগীর শারীরিক, মানসিক এবং আবেগগত অবস্থা নির্ণয় করতে হয় এবং সেই অনুযায়ী ঔষধের প্রয়োগ করতে হয়।

উদাহরণ

যদি কোনো রোগী মানসিক উদ্বেগ এবং ঘুমের অভাব নিয়ে আসে, এবং সেই সাথে শারীরিক কিছু লক্ষণ থাকে, তাহলে চিকিৎসককে সেই লক্ষণের উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত ঔষধ, যেমন Nux Vomica বা Ignatia, নির্বাচন করতে হবে। সঠিক ঔষধ নির্বাচন করলে তা অঘোম হিসেবে কাজ করবে এবং রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে।

অব্যার্থে ঔষধ নির্বাচন

অব্যার্থে ঔষধ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে করতে হয়। চিকিৎসকের তৃতীয় কর্তব্যের মধ্যে এটি একটি বড় অংশ, যেখানে রোগীর সম্পূর্ণ রোগীলিপি সংগ্রহ করে, তার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে ঔষধের প্রয়োগ করা হয়। হ্যানিম্যান এই প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন, কারণ একটি সঠিকভাবে নির্বাচিত ঔষধ রোগীকে দ্রুত আরোগ্য করতে সক্ষম।

ঔষধ নির্বাচন প্রক্রিয়া

১. রোগীর শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ বিশ্লেষণ করা।
২. লক্ষণ অনুযায়ী ঔষধের তালিকা তৈরি করা।
৩. রোগীর জীবনধারা এবং আবেগগত অবস্থা বিবেচনা করা।
৪. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং সম্ভাব্য প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা।
৫. রোগীর জন্য সর্বোত্তম ঔষধ নির্বাচন করা।

উপসংহার

স্পেসিফিক রিমেডি এবং অঘোম ঔষধ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মূল ভিত্তি। রোগীর ব্যক্তিগত অবস্থা এবং লক্ষণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করলে তা দ্রুত এবং নির্ভুল ফলাফল দিতে সক্ষম হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার এই প্রক্রিয়াটি রোগীর সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ নিশ্চিত করে।

রেফারেন্স:

১. হানিম্যান, স্যামুয়েল. অর্গানন অফ মেডিসিন, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, ১৮৪২।
২. ভট্টাচার্য, ড. রমেশ. হোমিওপ্যাথির মৌলিক তত্ত্ব, কলকাতা: চিকিৎসা প্রকাশনী, ২০১৭।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *